বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় আইএসডি শিক্ষার্থীর অসামান্য কৃতিত্ব

অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ ইউনিভার্সিটির আয়োজনে সম্প্রতি ‘গ্লোবাল চেঞ্জ ইট চ্যালেঞ্জ ২০২৫’ শীর্ষক বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকার (আইএসডি) কৃতি শিক্ষার্থী আদিত্য ভার্শনে। বাংলাদেশের একমাত্র ফাইনালিস্ট হিসেবে এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন তিনি।

 

মূলত, টেকসই উন্নয়ন ও পরিবেশের মতো বিষয়গুলোকে কেন্দ্রে রেখে বৈশ্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সমস্যাকে কীভাবে উদ্ভাবনী উপায়ে মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়ে তরুণদের উৎসাহিত করতে কিউএস র‍্যাংকিংয়ের ৩৭ নাম্বারে থাকা অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ ইউনিভার্সিটি এই ‘গ্লোবাল চেঞ্জ ইট চ্যালেঞ্জ ২০২৫’ আয়োজন করে। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতাটিতে বাংলাদেশ, চীন, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড ও ভারতের ৬টি দল অংশ নেয়। অংশগ্রহণকারী দলগুলো বিশ্বের অত্যন্ত জরুরি বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্বারোপ করে এর ওপর প্রেজেন্টেশন, গবেষণা ও উদ্ভাবনী সমাধান প্রস্তাব করে।

 

রিজিওনাল রাউন্ডে প্রতিটি দেশের স্থানীয় স্কুলগুলো অংশগ্রহণ করে। সেখানে থেকে ১২টি ফাইনালিস্ট দল অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত ফাইনাল রাউন্ডে অংশ নেয়।

 

বাংলাদেশে রিজিওনাল রাউন্ডে ১৩টি স্কুলের ১১টি দল অংশ নেয়, সেখান থেকে ফাইনালিস্ট হিসেবে আদিত্যর প্রকল্পটি বাছাই করা হয়। গ্র্যান্ড ফাইনালে আরও পাঁচটি দেশের শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতিযোগিতায় বৈশ্বিকভাবে তৃতীয় স্থান অর্জন করেন আদিত্য; সেখানে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে এমন আক্রমণাত্মক উদ্ভিদ কচুরিপানার সমস্যায় উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে আসা হয়। ‘উইড টু ওয়েলথ’ শীর্ষক এ প্রকল্পের মাধ্যমে আদিত্য কাগজ ও ঝুড়ির মতো পরিবেশবান্ধব পণ্য তৈরির মাধ্যমে এই সমস্যাকে সম্ভাবনায় রূপান্তরিত করতে চান।

 

এ বিষয়ে আদিত্য ভার্শনে বলেন, “আমরা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কথা বলছি; অথচ যে বিষয়গুলো সহজে বাস্তবায়ন করা সম্ভব এবং একইসাথে, ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, তা এড়িয়ে যাচ্ছি। ‘ওয়াটার হায়াসিন্থ – উইড টু ওয়েলথ’-এর মাধ্যমে আমি কচুরিপানাকে একটি পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ থেকে কমিউনিটি-নির্ভর সমাধানে পরিবর্তন করতে চাই।”

 

ভারতের কোয়েম্বাতুরে অবস্থিত ইন্ডিয়ান পাবলিক স্কুলের ৩ শিক্ষার্থী- শ্রীবাস্তব, শ্রীনিবাস ও শ্রীরাম এ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। তারা তাপমাত্রা বৃদ্ধির পেছনে মিথেন গ্যাসের ভূমিকাকে দায়ী করে এবং এক্ষেত্রে তাদের সমাধান, বায়োগ্যাস জেনারেটর ব্যবহার করে গোবরকে একটি পরিচ্ছন্ন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি হিসেবে পরিবর্তিত করা। ইন্দোনেশিয়ার বালিতে অবস্থিত তামান রামা ইন্টারকালচারাল স্কুলের আন্না, মিশেল ও নেইজা এ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। বালির সমুদ্রের ইকোসিস্টেমকে সহায়তা করতে সক্ষম হবে এমন ‘রিডিউসিং, রিইউজিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং’ সমাধান নিয়ে আসে তারা।

 

এ বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকার ডিরেক্টর স্টিভ-ক্যালান্ড স্কোবল বলেন, “অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিযোগিতার ফাইনালে অংশগ্রহণ করার মতো স্মরণীয় অর্জন অধিকার করায় এবং পরিবেশগত হুমকিকে অসাধারণ একটি সুযোগে পরিণত করতে পারবে এমন চমৎকার উদ্ভাবন নিয়ে আসায় আদিত্য ভার্শনে’র প্রতি শুভকামনা জানাচ্ছি। তার নিষ্ঠা ও কঠোর পরিশ্রমের কারণেই এ উদ্ভাবন ও বৈশ্বিকপর্যায়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ সম্ভব হয়েছে। আমরা তার সাফল্যে অত্যন্ত গর্বিত। এছাড়া, সকল বিজয়ীর প্রতি অভিনন্দন জানাচ্ছি আমরা।”

একইসাথে, ১২ ফাইনালিস্ট মোনাশ ইউনিভার্সিটির কলফিল্ড ও ক্লেটন ক্যাম্পাস ঘুরে দেখার সুযোগ পায়। এসময় তারা স্টক মার্কেট সিমুলেটর, ডিজাইন ওয়ার্কশপ, মিডিয়া ল্যাব ও লাইব্রেরির মতো ইউনিভার্সিটির বিশ্বমানের সুবিধাগুলো ঘুরে দেখে। এছাড়াও, তারা মেলবোর্নের চমৎকার লেনওয়ে (সড়ক-গলি) ও অস্ট্রেলিয়ার অনন্য বণ্যপ্রাণি সম্পর্কে জানার পাশাপাশি, সেখানকার শিক্ষার্থীদের সাথে প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে ক্যাম্পাস লাইফ সম্পর্কে জানার সুযোগ পায়।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে : মান্না

» শিক্ষার্থীদের সততার চর্চা করতে হবে : অর্থ উপদেষ্টা

» বাংলাদেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়নি আরব আমিরাত : রাষ্ট্রদূত

» সেনাবাহিনীর সাথে ইউপিডিএফের গোলাগুলি, অস্ত্র উদ্ধার

» ১ বছর আগে বলেছিলাম, অদৃশ্য শক্তি মাথাচাড়া দিচ্ছে, আজ দৃশ্যমান হচ্ছে: তারেক রহমান

» ছাত্রসংসদ নির্বাচনের প্রভাব জাতীয় নির্বাচনেও পড়বে: জামায়াত আমির

» রাতের অন্ধকারে ‘জিনের আসর’ বসিয়ে নেতা নির্বাচন করে জামায়াত: আজিজুল বারী হেলাল

» ক্ষমতায় গেলে নারী উদ্যোক্তাদের বিশেষ ঋণ দিয়ে স্বাবলম্বী করবে জামায়াত

» কেউ যেন বিএনপির নাম ব্যবহার করে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করতে না পারে: তারেক রহমান

» বুক ফুলিয়ে দুর্গাপূজা উদযাপন করুন: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপদেষ্টা

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় আইএসডি শিক্ষার্থীর অসামান্য কৃতিত্ব

অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ ইউনিভার্সিটির আয়োজনে সম্প্রতি ‘গ্লোবাল চেঞ্জ ইট চ্যালেঞ্জ ২০২৫’ শীর্ষক বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকার (আইএসডি) কৃতি শিক্ষার্থী আদিত্য ভার্শনে। বাংলাদেশের একমাত্র ফাইনালিস্ট হিসেবে এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন তিনি।

 

মূলত, টেকসই উন্নয়ন ও পরিবেশের মতো বিষয়গুলোকে কেন্দ্রে রেখে বৈশ্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সমস্যাকে কীভাবে উদ্ভাবনী উপায়ে মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়ে তরুণদের উৎসাহিত করতে কিউএস র‍্যাংকিংয়ের ৩৭ নাম্বারে থাকা অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ ইউনিভার্সিটি এই ‘গ্লোবাল চেঞ্জ ইট চ্যালেঞ্জ ২০২৫’ আয়োজন করে। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতাটিতে বাংলাদেশ, চীন, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড ও ভারতের ৬টি দল অংশ নেয়। অংশগ্রহণকারী দলগুলো বিশ্বের অত্যন্ত জরুরি বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্বারোপ করে এর ওপর প্রেজেন্টেশন, গবেষণা ও উদ্ভাবনী সমাধান প্রস্তাব করে।

 

রিজিওনাল রাউন্ডে প্রতিটি দেশের স্থানীয় স্কুলগুলো অংশগ্রহণ করে। সেখানে থেকে ১২টি ফাইনালিস্ট দল অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত ফাইনাল রাউন্ডে অংশ নেয়।

 

বাংলাদেশে রিজিওনাল রাউন্ডে ১৩টি স্কুলের ১১টি দল অংশ নেয়, সেখান থেকে ফাইনালিস্ট হিসেবে আদিত্যর প্রকল্পটি বাছাই করা হয়। গ্র্যান্ড ফাইনালে আরও পাঁচটি দেশের শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতিযোগিতায় বৈশ্বিকভাবে তৃতীয় স্থান অর্জন করেন আদিত্য; সেখানে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে এমন আক্রমণাত্মক উদ্ভিদ কচুরিপানার সমস্যায় উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে আসা হয়। ‘উইড টু ওয়েলথ’ শীর্ষক এ প্রকল্পের মাধ্যমে আদিত্য কাগজ ও ঝুড়ির মতো পরিবেশবান্ধব পণ্য তৈরির মাধ্যমে এই সমস্যাকে সম্ভাবনায় রূপান্তরিত করতে চান।

 

এ বিষয়ে আদিত্য ভার্শনে বলেন, “আমরা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কথা বলছি; অথচ যে বিষয়গুলো সহজে বাস্তবায়ন করা সম্ভব এবং একইসাথে, ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, তা এড়িয়ে যাচ্ছি। ‘ওয়াটার হায়াসিন্থ – উইড টু ওয়েলথ’-এর মাধ্যমে আমি কচুরিপানাকে একটি পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ থেকে কমিউনিটি-নির্ভর সমাধানে পরিবর্তন করতে চাই।”

 

ভারতের কোয়েম্বাতুরে অবস্থিত ইন্ডিয়ান পাবলিক স্কুলের ৩ শিক্ষার্থী- শ্রীবাস্তব, শ্রীনিবাস ও শ্রীরাম এ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। তারা তাপমাত্রা বৃদ্ধির পেছনে মিথেন গ্যাসের ভূমিকাকে দায়ী করে এবং এক্ষেত্রে তাদের সমাধান, বায়োগ্যাস জেনারেটর ব্যবহার করে গোবরকে একটি পরিচ্ছন্ন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি হিসেবে পরিবর্তিত করা। ইন্দোনেশিয়ার বালিতে অবস্থিত তামান রামা ইন্টারকালচারাল স্কুলের আন্না, মিশেল ও নেইজা এ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। বালির সমুদ্রের ইকোসিস্টেমকে সহায়তা করতে সক্ষম হবে এমন ‘রিডিউসিং, রিইউজিং অ্যান্ড রিসাইক্লিং’ সমাধান নিয়ে আসে তারা।

 

এ বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকার ডিরেক্টর স্টিভ-ক্যালান্ড স্কোবল বলেন, “অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিযোগিতার ফাইনালে অংশগ্রহণ করার মতো স্মরণীয় অর্জন অধিকার করায় এবং পরিবেশগত হুমকিকে অসাধারণ একটি সুযোগে পরিণত করতে পারবে এমন চমৎকার উদ্ভাবন নিয়ে আসায় আদিত্য ভার্শনে’র প্রতি শুভকামনা জানাচ্ছি। তার নিষ্ঠা ও কঠোর পরিশ্রমের কারণেই এ উদ্ভাবন ও বৈশ্বিকপর্যায়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ সম্ভব হয়েছে। আমরা তার সাফল্যে অত্যন্ত গর্বিত। এছাড়া, সকল বিজয়ীর প্রতি অভিনন্দন জানাচ্ছি আমরা।”

একইসাথে, ১২ ফাইনালিস্ট মোনাশ ইউনিভার্সিটির কলফিল্ড ও ক্লেটন ক্যাম্পাস ঘুরে দেখার সুযোগ পায়। এসময় তারা স্টক মার্কেট সিমুলেটর, ডিজাইন ওয়ার্কশপ, মিডিয়া ল্যাব ও লাইব্রেরির মতো ইউনিভার্সিটির বিশ্বমানের সুবিধাগুলো ঘুরে দেখে। এছাড়াও, তারা মেলবোর্নের চমৎকার লেনওয়ে (সড়ক-গলি) ও অস্ট্রেলিয়ার অনন্য বণ্যপ্রাণি সম্পর্কে জানার পাশাপাশি, সেখানকার শিক্ষার্থীদের সাথে প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে ক্যাম্পাস লাইফ সম্পর্কে জানার সুযোগ পায়।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com